অধ্যাপক ডা. এম কিউ কে তালুকদার
প্রফেসর ডা. এম কিউ কে তালুকদার ১৯৩৯ সালে সিরাজগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬২ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হতে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিন বছর মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্তব্যরত ছিলেন। ১৯৬৬ সালে তিনি ঢাকার ইন্সটিটিউশন অব পোস্টগ্র্যাজুয়েট মেডিসিন অ্যান্ড রিসার্চ-এ প্রফেসর ডা. নুরুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে কর্মরত ছিলেন। পরবর্তীতে ”সেন্টো’ নামক মেধাবৃত্তিপ্রাপ্ত হন এবং লন্ডনে পাড়ি জমান। সেখানে লন্ডন স্কুল অব হাইজিন এন্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিন হতে পুষ্টিবিজ্ঞানের উপর ডিপ্লোমা করেন। প্রফেসর ডা. এম কিউ কে তালুকদার ১৯৭২ সালে ইউনিভার্সিটি অব এডিনবার্গ হতে বায়োলজিকাল সায়েন্স এর উপর পিএইচডি করেন। এছাড়াও তিনি রয়েল কলেজ অব ফিজিশিয়ান, গ্লাসগো থেকে শিশুস্বাস্থ্যের উপর ডিপ্লোমা এবং এমআরসিপি করেন রয়েল কলেজ অব ফিজিশিয়ান, লন্ডন হতে। এখান থেকে তিনি ১৯৮৮ ফেলোশিপ অর্জন করেন।
১৯৭৯ সালে প্রফেসর ডা. এম কিউ কে তালুকদার সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে ঢাকা শিশু হাসপাতালে যোগ দেন। ১৯৯৫ সালে অধ্যাপক পদে ঢাকার ইন্সটিটিউশন অব পোস্টগ্র্যাজুয়েট মেডিসিন অ্যান্ড রিসার্চ-এ নিযুক্ত হন। এই প্রতিষ্ঠানে কর্তব্যরত থাকাকালীন তিনি বাংলাদেশ জার্নাল অব চাইল্ড হেলথ এর উপর কাজ শুরু করেন। এছাড়া তিনি প্রফেসর ডা. এম আর খানের সহচার্যে ১৯৮০ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত সারাদেশের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের প্রশিক্ষণ দেন।
তিনি ১৯৯৯ সালে ঢাকার মাতুয়াইলে প্রশিক্ষণ, গবেষণা এবং শিশুরোগ ও স্ত্রী ও প্রসূতিরোগের সেবা প্রদানের লক্ষ্যে ইন্সটিটিউশন অব চাইল্ড এন্ড মাদার হেলথ প্রতিষ্ঠা করেন। সরকারি চাকরি হতে অবসর গ্রহণের পর তিনি আশুলিয়া-য় অবস্থিত অলাভজনক প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর ওমেন আন্ড চাইল্ড হেলথ – এ প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হিসেবে যোগদান করেন।
প্রফেসর ডা. এম কিউ কে তালুকদার জনস্বাস্থ্য গবেষণা এবং পুষ্টি সম্পর্কিত বাংলাদেশের জাতীয় নীতি প্রণয়নেও ভূমিকা পালন করেন। তিনি মাতৃদুগ্ধ আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন এবং মাতৃদুগ্ধ পানের ওপর গুরুত্বারোপ করে ২০১৩ সালে গৃহীত হওয়া ‘মাতৃদুগ্ধ বিকল্প শিশুখাদ্য, বাণিজ্যিকভাবে প্রস্তুতকৃত শিশুর বাড়তি খাদ্য ও উহার ব্যবহারের সরঞ্জামাদি (বিপণন নিয়ন্ত্রণ) আইন’ প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
চিকিৎসায় বিশেষ অবদানের জন্য ২০০৫ সালে বাংলা একাডেমি প্রফেসর ডা. এম কিউ তালুকদারকে সম্মানসূচক ফেলোশিপ প্রদান করে। ২০১১ সালে তিনি বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমির স্বর্ণপদক লাভ করেন। ২০১৮ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় তৃতীয় সমাবর্তনে তাঁকে সম্মানসূচক পিএইচডি ডিগ্রি প্রদান করা হয়।